বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার শীর্ষে প্রায়ই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে অবস্থান করতে দেখা যায়। বিশেষত বাংলাদেশের ঢাকা, ভারতের দিল্লি, মুম্বাই এবং পাকিস্তানের লাহোর ও করাচি। তবে আজ এই চিত্রের ব্যতিক্রম দেখা গেছে। এই শহরেরগুলোর বায়ুদূষণ কমেছে।
গতকাল লাহোর ও দিল্লির বাতাসের মানে অবনতি দেখা গেলেও ঢাকার বাতাসের লক্ষণীয় উন্নতি দেখা গিয়েছিল। ৬০ স্কোর নিয়ে শহরটির বাতাস ‘মাঝারি’ শ্রেণিভুক্ত ছিল। আজও ঢাকার বাতাস ‘মাঝারি’ পর্যায়েই রয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ৬১ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ৪০তম স্থানে ছিল ঢাকা।
বৃষ্টি কিংবা ছুটির দিন না হলেও বাতাসের মানে এই পরিবর্তন রাজধানীবাসীর মনে স্বস্তি এনেছে। এতে করে বাইরে বের হলে দূষিত বাতাসের কারণে স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। বিশেষত শিশু ও বৃদ্ধসহ সংবেদনশীল মানুষদের জন্য বায়ুদূষণ অনেক বেশি ক্ষতিকর।
এদিকে, ঢাকার সঙ্গে সঙ্গে আজ দিল্লি ও লাহোরের বাতাসেও দূষণ কমেছে। গতকাল ১৪৯ স্কোর নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা দিল্লি আজ ৭৬ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ১৯তম স্থানে রয়েছে।
অন্যদিকে, গতকাল ১৫৩ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে লাহোর আজ ৫৮ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার ৪৭তম স্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুন: লাহোর ও দিল্লির বাতাসে দূষণ বাড়লেও ঢাকায় লক্ষণীয় উন্নতি
একই সময়ে আজ তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে কঙ্গোর কিনশাসা, একিইআই স্কোর ১৬০। এ ছাড়া, ১৫৮ ও ১৪৩ স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে উগান্ডার কাম্পালা ও চিলির সান্তিয়াগো।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কণা দূষণের এই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো— স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।